Facebook Twitter Instagram
    সংবাদ শিরোনাম
    • সর্বোচ্চ ঝাঁকুনি দেখল বাংলাদেশ : বিশেষজ্ঞ
    • বেলকুচির বিএনপি নেতা রাজ্জাক মণ্ডলের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার 
    • বেলকুচিতে “মাহিন সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন! 
    • রাজ্জাক আমার সব ওরে ছাড়া বাঁচবো না
    • উজিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি মাসুম সম্পাদক মুন্না 
    • আত্মহত্যাকারীর জন্য কি দোয়া করা যাবে? আত্মহত্যা আল্লাহর নিয়মের ওপর চূড়ান্ত হস্তক্ষেপ
    • ছাত্র-জনতার আন্দোলন ২০২৪-এর সকল শহীদদের স্মরণে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
    • চৌহালী যুব অধিকার পরিষদের কমিটি গঠন, সভাপতি হাসান খান তীব্র ও সম্পাদক মো: শাহজালাল রহমান 
    • উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল 
    • সিরাজগঞ্জে খাজা মোজাম্মেল হক্ (রঃ) ফাউন্ডেশন বৃত্তি ও সনদ প্রদান
    Facebook Twitter Instagram
    www.ss24bd.comwww.ss24bd.com
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • রাজধানী
    • রাজনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • বরিশাল বিভাগ
      • বরিশাল
      • পটুয়াখালী
      • ঝালকাঠি
      • পিরোজপুর
      • বরগুনা
      • ভোলা
    • সকল বিভাগ
      • ঢাকা বিভাগ
        • নরসিংদী
        • গাজীপুর
        • শরিয়তপুর
        • নারায়ণগঞ্জ
        • টাঙ্গাইল
        • কিশোরগঞ্জ
        • মানিকগঞ্জ
        • ঢাকা
        • মুন্সিগঞ্জ
        • মাদারিপুর
        • রাজবাড়ী
        • গোপালগঞ্জ
        • ফরিদপুর
      • খুলনা বিভাগ
        • চুয়াডাঙ্গা
        • ঝিনাইদহ
        • নড়াইল
        • বাগেরহাট
        • মাগুরা
        • মেহেরপুর
        • যশোর
        • কুষ্টিয়া
        • সাতক্ষীরা
      • চট্টগ্রাম বিভাগ
        • চট্টগ্রাম
        • কক্সবাজার
        • কুমিল্লা
        • খাগড়াছড়ি
        • চাঁদপুর
        • ব্রাহ্মণবাড়িয়া
        • মাইজদী
        • নোয়াখালী
        • রাঙ্গামাটি
        • লক্ষ্মীপুর
        • ফেনী
        • বান্দরবান
      • রাজশাহী বিভাগ
        • নওগাঁ
        • নাটোর
        • পাবনা
        • বগুড়া
        • রাজশাহী
        • চাঁপাইনবাবগঞ্জ
        • জয়পুরহাট
        • সিরাজগঞ্জ
      • সিলেট বিভাগ
        • সিলেট
        • সুনামগঞ্জ
        • হবিগঞ্জ
        • মৌলভীবাজার
      • রংপুর বিভাগ
        • দিনাজপুর
        • নীলফামারী
        • পঞ্চগড়
        • রংপুর
        • গাইবান্ধা
        • ঠাকুরগাঁও
        • লালমনিরহাট
        • কুড়িগ্রাম
      • ময়মনসিংহ বিভাগ
        • ময়মনসিংহ
        • নেত্রকোনা
        • জামালপুর
        • শেরপুর
    • খেলা
      • ফুটবল
      • বিপিএল
      • ভলিবল
      • কাবাডি
      • হকি
      • টেনিস
      • হ্যান্ডবল
      • ক্রিকেট
    • অন্যান্য
      • ইসলাম ও জীবন
      • রেসিপি
      • স্বাস্থ্য, ফিটনেস ও চিকিৎসা
      • ভিডিও গ্যালারি
      • ফিচার
      • বিনোদন
      • তথ্যপ্রযুক্তি
      • সম্পাদকীয়
      • সাহিত্য
      • লাইফ স্টাইল
      • শিক্ষা
    www.ss24bd.comwww.ss24bd.com
    Home»অন্যান্য»ফিচার»অলিক মহাশক্তির সন্ধানেই বাউলরা প্রেম ও বিশ্বাস নিয়ে মাজার সঙ্গীত গায়
    ফিচার

    অলিক মহাশক্তির সন্ধানেই বাউলরা প্রেম ও বিশ্বাস নিয়ে মাজার সঙ্গীত গায়

    এস.এস টুয়েন্টিফোর ডেস্কBy এস.এস টুয়েন্টিফোর ডেস্কApril 23, 2019No Comments0 Views
    Facebook Twitter Pinterest LinkedIn WhatsApp Reddit Tumblr Email
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

    অলিক মহাশক্তির সন্ধানেই বাউলরা প্রেম ও বিশ্বাস নিয়ে মাজার সঙ্গীত গায়

    নজরুল ইসলাম তোফা:: বাউল সম্প্রদায়ের বিশ্বাস বাউল সঙ্গীত কিংবা মাজার সঙ্গীতই একটি বিশেষ ধর্মমত। এই মতের সৃষ্টিও হয়েছে বাংলার মাটিতেই। বাউল কূল শিরোমণি লালন সাঁইয়ের গানের মধ্যেই যেন বাউল মতের পরিচিতি লাভ করেছে। এ বাউল গান যেমন জীবন দর্শনের সঙ্গেই সম্পর্কিত, তেমনি বলা যায় সুর সমৃদ্ধ। এ মাজার বাউলদের সাদামাটা কৃচ্ছ্র সাধনার জীবন আর তাদের জনপ্রিয় লোকজ বাদ্যযন্ত্র একতারা নিয়ে গান বাজিয়ে ও গেয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ানোই তাদের অভ্যাস। মাজার প্রেমী সাধারণ নারী এবং পুরুষদের সুরের জগতে প্রবেশ করার আগেই যেন ধ্যান মগ্ন হয়ে যান। পরে তারাই ইহজগতের ও পরজগতের অশেষ ফায়দা হাসিলের জন্য এক সুমহান লক্ষ্যে নিজস্ব আত্মায় যেন নিগূঢ় রহস্য খোঁজে। এই জগতের ধ্যানরত মানুষরাই শুধু আধ্যাত্মিক, তারা পীর আউলিয়ার বিশ্বাসেই অন্তরে ধ্বনিত করে অলিক এক মহা শক্তি। সে শক্তিটাকেই তারা তাদের- ”খোদা” মানে। অন্তরে বিরাজমান সেই খোদা বিশ্বাসে তারা সুর পিপাসু হয়েই ‘মাজারপ্রেমী’ অজস্র হতদরিদ্র সাধারণ মানুষ বেঁচে থাকে। এমন প্রয়াস সৃষ্টি করেই হোক অথবা তাদের পেটের ক্ষুধা নিবারণ করার জন্যই হোক, মন এবং শরীরকে সুস্থ, সতেজ রাখার জন্যই সঙ্গীতের প্রতি গুরত্বের সহিত নান্দনিক আবেদন খোঁজে বা দৃষ্টি রাখে। বহু ধাঁচের গানের দেশ এই বাংলাদেশ। মাজার প্রেমী শত সহস্র বাউলের দেশ, এই বাংলাদেশ। প্রাচীন ইতিহাস এবং ঐত্যিহ্যের বিশাল সমৃদ্ধি বাউল সঙ্গীতের ভান্ডারকে নিয়ে রেকর্ড সৃষ্টিকারী লোক সংস্কৃতির নানা শাখায় বিচরণে বিনোদন পূর্ণ আধ্যাত্মিকতার দেশ, ‘সোনার বাংলাদেশ’। এমন মাজার সংস্কৃতিতেই আগর বাতি, মোম বাতি, জালিয়ে কিংবা নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্রের সংমিশ্রণেই রংবেরংয়ের বিভিন্ন প্রকারের বৈদ্যুতিক বাতির প্রয়োগ ঘটিয়ে আলোক উজ্জ্বল পরিবেশেই ভক্ত এবং মুরীদ গণদের সারা রাত্রি বিনোদন প্রদান করে থাকে। এ সমাবেশের মধ্যে তারা খোদা’র প্রতি শত সহস্র হৃদয় নিংড়ানো প্রেম-ভালোবাসা’র গভীর এক রহস্য খোঁজে পায়। এ ধ্যানমগ্ন হওয়া মানুষরাই আনন্দ-উল্লাস, বিরহ বা তাদের অন্তর শীতল করার জন্য যুগ যুগ ধরে আধ্যাত্মিকতার এমন এ লোকজ সঙ্গীতের আয়োজন করে থাকে। সুতরাং- বাউলরাই নাকি ওলী, তাই বলতেই হয়- ওলী আওলিয়ার দেশ এই বাংলাদেশ। ২০০৫ সালে “ইউনেস্কো” বিশ্বের মৌখিক ও দৃশ্যমান ঐতিহ্যসমূহের মাঝে বাউল সঙ্গীতকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে ঘোষনা করেছে। এই বাংলাদেশে বা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ সৃজনশীল সাধকদের মধ্যে ‘বাউল সম্প্রদায়’ অত্যন্ত প্রসিদ্ধ। এই সম্প্রদায় মূলত দেহ-সাধনা করে এবং সঙ্গীতের মাধ্যমেই সেই দেহ-সাধনার কথা প্রকাশ ও প্রচার করে। বাউলদের রচিত সঙ্গীতে ভাবের গভীরতা, সুরের মাধুর্য, বাণীর সার্বজনীন মানবিক আবেদন বিশ্ববাসীকে যেন এক মহামিলনের মন্ত্রে আহ্বান করে। আবার তাদেরকেই ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘ইউনেস্কো’ বাংলার বাউল সঙ্গীতকে দি রিপ্রেজেন্টিটিভ অব দি ইন্টানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটির তালিকা ভুক্ত করেছে।অবশ্য তারও আগেই বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশ-ষাটের দশক হতেই যেন ইউরোপ-আমেরিকার নানা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাউলগান ও বাউলদের সাধনপদ্ধতি নিয়ে নানা ধরনের গবেষণা কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। পাশাপাশি এই বাংলার বাউলগান পরিবেশন করতে গ্রামের বাউল সাধকশিল্পীগণ বিভিন্ন দেশ-বিদেশেও ভ্রমণ করেছে। তবে, জাতীয় পর্যায়ে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাউলদের সাধনা কিংবা সঙ্গীত সম্পর্কে আগ্রহের সূচনা হয়ে ছিল প্রাথমিক পর্যায়েই কাঙাল হরিনাথ মজুমদার, ইন্দিরা দেবী, সরলা দেবী অথবা নবকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের তৎপরতায়, পরবর্তীকালেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘বাংলার বাউল’ বা বাউল সম্পর্কে বিশেষভাবে বিশ্ববাসীকে দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়ে ছিল, এমনকি তাঁর নিজের রচনাতেও ভাবসম্পদ হিসেবে বাউলগানের ভাবাদর্শ গ্রহণ করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত এ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সুর গৃহীত হয়েছিল বাউল গগন হরকার গান হতে। তাই তো এ বাংলাদেশের সঙ্গীত- “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”।

    প্রত্যন্ত গ্রাম এবং শহরের মাজারে বাউলদের কাছে গিয়ে আতিথ্য গ্রহণ অথবা রাত্রি বাস করেছে যারা। তারাই তো তাদের এমন অনভ্যস্ত জীবন এবং সেই জীবন যাপন করার কষ্টকর কাহিনী আবার তাদের জীবনযাত্রার অনেক স্বাদ নেয়ার ইতিহাসটাও যেন কপচাতে পারেন। তেমনিই এক বাউল প্রেমী, সঙ্গীত পাগল মানুষ শফিকুল ইসলাম শফি’র সহিত দু’দন্ড আলাপ আলোচনায় অনেক নিগূঢ় তত্ত্ব উঠে আসে। তিনি বলেন, মাজারে কতটা কি দেখেছি, আবার কি পেয়েছি তাহয়তো ভাষায় ব্যক্ত করা সম্ভব নয়, তবে সবাই তা বুঝবেনও না। তবে একটা কথা সঠিক যে, তাদের কাছে গিয়ে যা বুঝেছি তা হলো, তারা গভীর বিশ্বাস আর মনের প্রসারতা নিয়েই এই পথে থাকে।চরম দারিদ্র্যতা রয়েছে তাদের কিন্তু মন একেবারেই খোলা আকাশের মতো। সুর জগতে তারা বিচরণের মাধ্যমে যেন খোদার নিগূঢ় ভালোবাসা পেয়ে থাকে। একটু অতীতের দিকেও যদি দৃষ্টি দিই- তা হলে বলা যায়, বাংলায় আবহমান কাল থেকেই নানা শ্রেণী ও বিভিন্ন ধর্মালম্বী মানুষ বসবাস করলেও, এখন যেন মাজারে মুসলমানদের পরিমানটা খুবই বেশী। কিন্তু এক সময়েই দেখা যায় বৌদ্ধ ও হিন্দুদের আধিপত্য ছিল তাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। এই দেশের সেন বংশের পর থেকে ইসলাম প্রচার কিংবা প্রসার ঘটেছে। আর ঠিক তখন থেকেই- অনেক পীর, ওলি ও আউলিয়ার আবিভাব ঘটে থাকে। সুতরাং তাদের মৃত্যুর পরেই সমাধিস্হলে মাজার রূপ নেয়। মাজার গুলোতে ধিরে ধিরেই বিনোদন পূর্ণ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ দেশের ৬৪ জেলায় ছোট বড় অনেক মজার এবং তার বিনোদনের ইতিহাসও রয়েছে। এমন এই ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে খন্ড খন্ড করে আলোচনায় আনা না গেলেও সমষ্টিগত ভাবেই মাজার সংস্কৃতির গানের বিভিন্ন শাখা প্রশাখা নিয়ে শ্রদ্ধেয় এক বাউল শিল্পী ও স্বরচিত সঙ্গীত রচয়িতা, গুনিজন শফিকুল ইসলাম শফিকের সঙ্গে মতবিনিময় হয়। এই দেশের সঙ্গীতের গৌরবময় ইতিহাস, শিক্ষা ও সংস্কৃতি নিয়ে গড়ে না উঠলে সম্ভব হতোনা এমন মাজার সংস্কৃতি। মাজার সংস্কৃতির সঙ্গীত আজকে গুরুত্ব পূর্ণ সঙ্গীত বিনোদনের অঙ্গও বলা যেতে পারে। এমন এ সঙ্গীত আবার বিভিন্ন উপাদানেই মাজারকে সমৃদ্ধ করেছে। এই সকল উপাদানে শ্রুতি, স্বর, রাগ, গ্রাম, অলঙ্কার, রস, বর্ণ, ভাব ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত না করলে- মাজারের বিনোদন পূর্ণতা পেতনা। এই সংগীতের এমন সকল উপাদানের মহিমা বা মাধুর্য’কে ইতিহাসের নিরীখেই আজো মানুষের কাছে মাজার বাউলগণেরা অক্লান্ত ভাবে এ সঙ্গীতের আধ্যাত্মিকতা অনুশীলন করছে। অন্যদিকে মাজারভক্ত অনেকে সঙ্গীতের ইতিহাসের বিচিত্র উপাদান সংগ্রহেও ব্যস্ত আছে। এ ভাবে যেন আরো রচিত হচ্ছে এ মাজার ভিত্তিক সঙ্গীত শাস্ত্রের নানা রূপ নানা দিক। আসলে বলা যায়, আদিম যুগ থেকে ক্রমবিবর্তনের মাঝ দিয়েই বর্তমান যুগ পর্যন্ত যে এক ধারাবাহিকতা সঙ্গীতের ভেতর পাওয়া যায়, সেটাই হলো সঙ্গীতের ইতিহাস। তেমনি ভাবেই দিনে দিনে এই দেশে এসেছে মাজার সংস্কৃতি। সাধারণত মানুষের মন, চিন্তা এবং তাদের ভাবের রাজ্যেই যেন অহর্নিশি বিচরণের সংস্কৃতিই- এই মাজার বিনোদন। তাই তাদের এ সঙ্গীতই শ্রেষ্ঠ বিদ্যা। সঙ্গীত মানুষকে জন্ম-মৃত্যুর পারে নিয়ে যায় এবং তাদেরকেই শাশ্বত শান্তি দান করে। বাংলার “বাউল”, বাউল মত কিংবা বাউলসঙ্গীত তথা বাউলগান নিয়ে নানা জনের নানা মত প্রচলিত। এই মতানৈক্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে “বাউল” শব্দটি। আসলে, এমন বাউল শব্দটির অর্থ, তাৎপর্য, উৎপত্তি ইত্যাদি নিয়ে অদ্যাবধি গবেষকরা কোনো সু-নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত দিতেও পারে নি। তেমনিও বাউল মতের স্বরূপ-বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে যেন তাদেরকে কোনো সু-নির্দিষ্ট ধারণা প্রদান করতে পারেনি। নানা জনের নানা মত নিয়েই এমন এ ”বাউল মত” বিষয়ে অমীমাসিংত আলোচনা চলছে কিংবা আগামীতেও তা চলমান থাকবে বলেই ধারণা করা যায়। মাজারচত্বর ঘিরেই যেন বাউল, ফকিরি এবং মুর্শিদী গানের মূূর্ছনাতেই আড়ম্বরপূর্ণ অনেক গানে মুখরিত থাকে। সঙ্গীতের সরগরম হওয়া বহু মাজারেই তারা যেন বাউল, ফকিরি, মুর্শিদী ধারার আধ্যাত্মিক গান ও সাধনা ভিত্তিক গান গায়। তা ছাড়াও মাজারে বহু ধারার গানও হয়ে থাকে বিভিন্ন অঞ্চলভেদে। যেমন, লালন গীতি, কবি গান, জারি গান, দোহার গান, হাপু গান, যোগীর গান, ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া, চর্যা গীতি, মাদারগান, মনসারগান, বারোসাগান, বারমাসি গান, বাইজী গান, ধূয়া গান, টপ্পা গান, কীর্তন,পপ, গজল, ভজন, বিচ্ছেদী, লোক গীতি, ব্লুজ ও নৌকা বাইচের গান সহ ইত্যাদি ধরনের বিনোদনপূর্ণ সঙ্গীত মাজার সংশ্লিষ্ট পরিবেশে মাজার ভক্ত এবং মাজার বিশ্বাসী সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাউল সাধনার এমন প্রকৃতি বিচারে “ডক্টর উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মতে”- জানা যায় যে, খ্রিষ্টীয় সতেরো শতকের মধ্যভাগ হতে বাউল মতের উদ্ভব। গুরু, মৈথুন কিংবা যোগ তিনটিই সমগুরুত্ব পেয়েছে বাউল মতে। তাইতো গুরু, বিন্দু ধারণ কিংবা দম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের কথাই বাউল সঙ্গীতে আধ্যাত্মিকতার বহিঃপ্রকাশ। সৎ গুরুর নিকট দীক্ষা না নিলেই যেন সাধনায় সিদ্ধি লাভ করা অসম্ভব কিংবা বিন্দুধারণে সামর্থ্যই সিদ্ধির প্রকৃষ্ট নিদর্শন। “বাউল” মতে আত্মা এবং পরমাত্মায় অভিন্ন। এমন এ দেহস্থিত আত্মাই-‘মানুষ’, ”মানের মানুষ”, ”রসের মানুষ”, ”অলখ সাঁই”। বাউলের রস স্বরূপ হচ্ছে সাকার দেহের মধ্যেই যেন ‘নিরাকার আনন্দস্বরূপ’ আত্মাতে স্বরূপেই উপলব্ধি করার প্রয়াস। এটিই যেন “আত্মতত্ত্ব”। এর মাধ্যমেই অরূপের কামনায় রূপ সাগরে সাধকদের ডুব দেয়া, তাদের স্বভাব থেকেই ভাবের উত্তরণ। সহজিয়াদের সহজেই সরল মানুষে পরিণত হয়। তারাই সৃষ্টি করে মহা-ভাব কিংবা হৃদয়ে সহজ অবস্থা। এ বাউলেরাই মূলত মাজারে মাজারে সাধনায় সে মহা-ভাব অর্জন করে।

    বাংলাদেশের মাজার শব্দটি আরবি থেকে এসেছে। মাজারের শাব্দিক অর্থ “সাক্ষাতের স্হান”। সাধারণ ভাবে এই দেশের মাজার বলতে ওলি-দরবেশ, সুফি-সাধক, পীর-ফকির-বাউলদের কবর স্হানকেই ধরা হয়। বলা যায়, সাধারণ কবর আর মাজারের মধ্যেই একটা বিস্তর পার্থক্যই রয়েছে। মাজার মূলত জাক-জমক একটি বিনোদন পূর্ণ ‘কবর স্হান’। এমন এই স্হানে সাধারণ মানুষের সৌজন্যে যুগ যুগ ধরে যেন বিনোদনের পসরা সাজিয়ে ওরস উৎসব করে। এই উৎসবে সাধারণ মানুষসহ বাউল শিল্পী বা গায়কের আনাগোনার পরিমান সবচেয়ে বেশী। এই মাজারেই যেসব শায়িত ব্যক্তিরা রয়েছে, তাদের অসংখ্য ভক্ত-মুরিদ কিংবা খাদেম যারা থাকে, তারাই যেন আস্তে-আস্তে বিনোদনপূর্ণ এক মাজার চত্বরে পরিনত করে থাকে। তারাই সাধারণ মানুষকে ভক্তি, শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, আধ্যত্মিকতা, সংস্কার, লোকাচার বা ঝাড়- ফুক সহ বিভিন্ন বিনোদনের আয়োজনও করে। এমন মাজার প্রিয় ভক্তকুল মানুষদের অন্তরে অন্তরে গভীর ভাবে আস্হা ও তাদের নির্ভরশীলতা যেন স্হান পায় সেই লক্ষে মাজার বিনোদনের উদ্দেশ্যে মাজারকেই যেন পাকা পোক্ত করে। আবার শুনা যায়, ব্রিটেনে অনেক জায়গায়তে নাকি ডিজিটাল মাজার নামে বিনোদন নির্ভর বহু মাজার রয়েছে। সে সব মাজারগুলো নির্ধারিত সময়ে চলে। রমজান মাস ছাড়া বছরের বাকি সময়েই ডিজিটাল বাক্সগুলোতেও যেন নাচ হয়, আর তা লাখো-কোটি মানুষরা এই সব বিনোদন উপভোগ করে। এ সকল ডিজিটাল কিংবা কমিউনিটি নাম ধারি বিনোদনপূর্ণ মাজার গুলোতে হাজার হাজার মানুষরা ঢেলে দেয় অঢেল অর্থ, তারা ‘গাঁটের টাকা-পয়সা’ খরচও করে এমন মোকামের উদ্দ্যেশেই। তারা ভাবে, এই ভাবেই যেন তাদের পরকালের মনস্কামনা পূর্ণ হবে। বাউল-সাধনার- “পূর্ণাঙ্গ উদ্ভব কিংবা বিকাশ কাল” হিসেবে সাধারণত ১৪৮৬ থেকেই ১৫৩৪ খ্রিষ্টাব্দসহ বর্তমানে চৈতন্যদেবের সময়কেই শনাক্ত করা হয়। সুতরাং এ কথাও জানা যায়, চৈতন্যদেবের মৈথুনাত্মক সাধন-পদ্ধতি অনুসরণেই আউল চাঁদের শিষ্য “মাধববিধি” বাউলমত প্রবর্তন করে। আবারও মাধববিধির শিষ্য বীরভদ্রের তৎপরতায় এ বাউল মতের বিস্তৃতি ঘটে। যাই হোক, এ বাউল মতের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে ডক্টর আহমদ শরীফ বলেছেন, ‘যে-সব প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধ ইসলাম কবুল করে ছিল। আর যে-সব প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধ হিন্দু- সমাজ ভুক্ত হয়ে নিজেদের পূর্ব পুরুষের ধর্মা চরণে রত ছিল, তারাই একালে বাউল সম্প্রদায়ভুক্ত হয়েছে। বৌদ্ধ ঐতিহ্যে সাধারণ ‘উল্টরাধিকার’ ছিল বলেই হিন্দু-মুসলমানদেের মিলনে “বাউল মত” গড়ে উঠতে পেরেছে’। বাউল তত্ত্বে এবং সাধনায় প্রচলিত মূল্যবোধ কিংবা আচারকে বিপরীত রূপে আদর্শায়িত করা হয়। তাই প্রচলিত শাস্ত্রবিরোধী সাধনা নানা বৈচিত্র্য-মত রূপে বাউল জীবনচর্যা বিকৃতি করেই যেন রচনা করেছে। তা হলো যে অলৌকিক ঈশ্বর, দেহব্যতিরিক্ত আত্মা, স্বর্গাদি পরলোকে অবিশ্বাসী, বাউল ইহবাদী কিংবা দেহবাদী ইত্যাদি। তবে, যুক্তি যুক্ত অর্থেই বলি আর্থ- সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিধিবিধানের আলোকে প্রতিবাদী মানুষেরা বাউল মতবাদ দিনে দিনেই গ্রহণ করছে। বাউলের গাওয়া গানের পাশা পাশিই মহিলা বাউলরা মাজারে থেকে গান করে। এ বাউলানিদের জীবন যাপনও অনেক ক্ষেত্রে হয় নাকি রোমান্টিক। তাদের এমন জীবনকেই বিপরীত রূপে আদর্শায়িত করে কেউ কেউ। আবার সঙ্গী হিসেবে সাধন সঙ্গিনী হওয়াটাকেও যুুুুক্তিযুক্ত মনে করেছে কেউ কেউ। কি যায় আসে যুক্তিতর্কে সাধনার মূল লক্ষ নাকি খোদা কিংবা ঈশ্বরকে সন্তুষ্টি করা। তাইতো তারা এ বাউল সাধনায় বাউলরা সাধনসঙ্গিনী করে যেন ধ্যানজ্ঞানে মগ্ন হওয়ার চেতনা খোঁজে। এসব মাজারের অনেক আখড়ায় গিজগিজ করে অগনিত মানুষ, তারা সেই সব আখড়ায় প্রান খুলে গান গায় বা ভাববাদী কথা বলে অনেক শ্রোতার মনের মণিকোঠায় স্হান পায়। বাউলদের সঙ্গে বাউলানি’রা লালনের বহু ভাববাদী এবং বিচ্ছেদী গানের এক সমন্বয়ী গোষ্ঠী সৃষ্টি করে। একাধিক ব্যক্তির পরিশ্রমেই একএকটি গানের জন্ম হয় মাজারে। প্রত্যেক গানই এক সঙ্গীত স্রষ্টার কাছে নিজস্ব সন্তান সমতুল্য। এখানে- গীতি কবি, সুরকার ও কণ্ঠ শিল্পীর ভূমিকা কারও চেয়ে কারও কম নয়। একটি গানের জন্ম সেতো পরিবেশ গত ভাবে অন্তর থেকেই। মাজারকেন্দ্রিক স্বরচিত সঙ্গীতগুলো প্রায়ই যেন ভক্ত বৃন্দের নিজস্ব লেখা চেষ্টা থাকে। বর্তমানে মাজার কেন্দ্রিক বহু গান গুলো বিভিন্ন শিল্পীর কন্ঠে অডিও এ্যালবাম কিংবা সিডি করে বের হচ্ছে। তার বিক্রিও যে কম হচ্ছে এমন বলা যাবেনা। সুতরাং এ মাজারের গানই বাংলার সঙ্গীত এবং সংস্কৃতির এক উল্লেখ যোগ্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত। তাই এমন মাজার মুলত অসাম্প্রদায়িক। এখানে- সব ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী ও গোত্রের মানুষরা নিজস্ব ধর্ম বা বিনোদনের উদ্দ্যেশেই যায়। ওলী বাবার কাছেই কোনও বিভেদ নেই। তিনি নাকি সবার ডাকে সাড়া দেন। সেই ডাক যদি অন্তরের ডাক হয়ে থাকে। ধর্মকে উপজীব্য করে তারা সাধারণ মানুষদের দীর্ঘ কালের বিশ্বাস, মূল্যবোধ কিংবা তাদের বিনোদনের রীতিনীতির এরকম সাংস্কৃতিক গুরুত্বকে বহন করে আসছে। অস্বীকার করবার উপায় নেই, এই মাজার সঙ্গীতের বিনোদন- আজও কোটি কোটি মানুষদের অন্তরকে স্পর্শ করে কিংবা এই সংস্কৃতি শ্রোতাদের অন্তরে সারা জীবন অক্ষত থাকবে। সুতরাং তাদের সুখে দুঃখে, প্রেরণা, স্বপ্ন ও প্রেমে সঙ্গীতই সব সময় বন্ধুর মতো। তাদের ভাল লাগা এক একটি “মাজার সঙ্গীত” যেন সারা জীবন পথ চলার নিত্য সঙ্গী।

    লেখক:

    নজরুল ইসলাম তোফা

    টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা,

    চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।

    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Telegram Email
    এস.এস টুয়েন্টিফোর ডেস্ক

    Related Posts

    একুশঃ ভাষা থেকে স্বাধিনতা–মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম সাদিক

    February 17, 2022

    পরকীয়া ভয়ঙ্কর এক ব্যাধি

    October 30, 2021

    শখ মিটে গেছেঃ শবনম ফারিয়া

    September 25, 2021

    Leave A Reply Cancel Reply

    © 2025 SS24BD Designed by SS24BD.COM.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Go to mobile version